বছর ঘুরে আবারও শুরু হয়েছে রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের মাস মাহে রমজান। রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদতের মধ্যে অন্যতম, আর তাই সারা বিশ্বের মুসলিমরা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে রোজা পালন করে থাকেন। কিন্তু পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় পবিত্র রমজান মাসে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেপ্তার করছে দেশটির ইসলামিক পুলিশ। মূলত কানো প্রদেশে দিনের বেলা জনসমক্ষে খাবার খাওয়ার কারণে তাদের আটক করা হয়েছে।
এছাড়া রমজানের সময় খাবার বিক্রির দায়েও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব মুসলমান প্রকাশ্যে খাবার খাচ্ছেন বা পানীয় পান করছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সেইসাথে যারা রমজানের শুরুতে খাবার বিক্রি করছে, তারাও অভিযানের আওতায় পড়েছেন।
হিসবাহের ডেপুটি কমান্ডার মুজাহিদ আমিনুদিন জানিয়েছেন, রোজা না রাখার কারণে ২০ জনকে এবং খাবার বিক্রির অভিযোগে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান পুরো মাস জুড়ে চলবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা অমুসলিমদের নিয়ে কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছি না। তবে রমজানের প্রতি অসম্মান ক্ষমা করা হবে না। প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের প্রকাশ্যে খাওয়া-দাওয়া করা হৃদয়বিদারক এবং আমরা এমন কাজ মেনে নেব না।”
গ্রেপ্তারকৃত ২৫ জনকে শরিয়াহ আদালতে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। হিসবাহের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “জনসমক্ষে কেউ খাবার খেলে আমরা প্রায়ই গোপন তথ্য পাই। অনেক সময় স্থানীয়রা আমাদের ফোন করে জানায়, এবং আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সেখানে যাই।”
এমনকি “অনুপযুক্তভাবে চুল কাটা” এবং হাঁটুর ওপরে শর্টস পরার অভিযোগেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুজাহিদ আমিনুদিন।
এর আগে গত বছরও রোজা না রাখার জন্য মুসলিমদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তাদের কাছ থেকে রোজা রাখার প্রতিশ্রুতি নিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আত্মীয়দের ডেকে এনে তাদের রোজা পালনের বিষয়ে নজরদারি করতে বলা হয়েছিল।
তবে এবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে হাজির করা হবে। মাত্র দুই দশক আগে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ১২টি প্রদেশে ধর্মনিরপেক্ষ আইনের পাশাপাশি শরিয়াহ আইন কার্যকর করা হয়, যেখানে মুসলিম জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে এই প্রদেশগুলোতে বসবাসকারী খ্রিস্টান সংখ্যালঘুদের জন্য শরিয়াহ আইন প্রযোজ্য নয়।