রাশিয়া তালেবান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে রাশিয়া তালেবানের নিয়োগকৃত নতুন রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে রাশিয়া বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই স্বীকৃতি দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করবে। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এই সিদ্ধান্তকে “সাহসী পদক্ষেপ” হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপ অন্যদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
যদিও জাতিসংঘসহ বিশ্বের বড় কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। যুক্তরাষ্ট্র তালেবান নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে এবং আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিলিয়ন ডলারের সম্পদ জব্দ করে দেশটির আর্থিক ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক লেনদেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
রাশিয়া ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা হিসেবে দেখেছে এবং তখন থেকেই তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০২২ ও ২০২৪ সালে তালেবান প্রতিনিধিরা রাশিয়ার অর্থনৈতিক ফোরামে অংশ নিয়েছেন, ২০২৩ সালে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মস্কো সফর করেন, এবং ২০২৪ সালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তালেবানকে “সন্ত্রাসবিরোধী মিত্র” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এছাড়া ২০০৩ সালে রাশিয়া তালেবানকে “সন্ত্রাসী সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা করেছিল, কিন্তু ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
বর্তমানে রাশিয়া তালেবান শাসিত আফগানিস্তানকে অর্থনৈতিক অংশীদার এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তায় সহযোগী হিসেবে দেখছে, বিশেষ করে আইএসআইএস মোকাবিলায়। রাশিয়া ইতোমধ্যে কাবুলে ব্যবসায়িক কার্যালয় খুলেছে এবং আফগানিস্তানকে গ্যাস পরিবহনের ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে।