রাশিয়া ও ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের মধ্যে এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় কার্যক্রমে এক দিনে মোট ৭৮০ জন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। শুক্রবার দিনভর চলা এই বন্দি মুক্তির ঘটনায় সামরিক ও বেসামরিক উভয় প্রকার বন্দিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রুশ ও ইউক্রেনীয় পক্ষ থেকে সমান সংখ্যক, অর্থাৎ ৩৯০ জন করে বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৭০ জন করে সেনা সদস্য এবং ১২০ জন করে সাধারণ বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। এই বন্দি বিনিময় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে তুরস্কে অনুষ্ঠিত দুই দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে হওয়া সমঝোতার ভিত্তিতে। ওই বৈঠকে মোট ১ হাজার বন্দিকে ছাড়ার বিষয়ে সম্মত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেন, যার মধ্যে প্রথম ধাপে শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ৭৮০ জন। বাকি ২২০ জনকে আজ শনিবার এবং আগামীকাল রোববার মুক্তি দেওয়া হবে।
মুক্তিপ্রাপ্তদের একজন ইউক্রেনীয় সেনা সদস্য ওলেক্সান্দার নেহির। তিনি জানান, নিয়মিত সাপ্তাহিক সাক্ষাতের সময় তার স্ত্রী হঠাৎ তাকে মুক্ত অবস্থায় দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। নেহির বলেন, “আপনার যদি কখনো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে না হয়, তবে এই অনুভূতি বোঝানো কঠিন। আমি শুধু বলব, বিশ্বাস কখনো হারাবেন না।”
অন্যদিকে, খেরসন প্রদেশে ৯ মাস আগে বন্দি হওয়া রুশ সেনা সদস্য ওলেকসান্দার তারাসোভও মুক্তিপ্রাপ্তদের একজন। তিনি বলেন, “আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি সত্যিই মুক্ত।”
এই বড়সড় বন্দি মুক্তির বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “মস্কো-কিয়েভ উভয় পক্ষের সমঝোতাকে স্বাগত। এই উদ্যোগ কি ভবিষ্যতে বড় কোনো সুসংবাদ বয়ে আনবে?”
বিশ্বজুড়ে চলমান উদ্বেগের মধ্যেও এই বন্দি বিনিময় নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে, যা হয়তো শান্তির পথ উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।