রাশিয়ায় ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। রুশ বাহিনী পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৪৭ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, যার মধ্যে ১২৭টি চলতি বছরের। ইউক্রেনীয় প্রসিকিউটর-জেনারেল অফিসের যুদ্ধ বিভাগের প্রধান ইউরি বেলোসভ জানান, এই সংখ্যার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, “গত বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে এ বছরও মৃত্যুদণ্ড অব্যাহত রয়েছে। দুঃখজনকভাবে শীত ও গ্রীষ্মে এটি আরও বেড়েছে।”
আন্তর্জাতিক মানবিক আইন, বিশেষ করে তৃতীয় জেনেভা কনভেনশনে যুদ্ধবন্দিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার কথা বলা আছে। এই আইন অনুযায়ী, যুদ্ধবন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর রাচেল ডেনবার বলেন, “ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দিদের রুশ সেনাদের হাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অভিযোগের পক্ষে প্রমাণের অভাব নেই।” তিনি আরও বলেন, “এখানে মূল বিষয় হল দায়মুক্তি। রাশিয়ান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলোর উত্তর তাদের দেওয়া উচিত।”
ডেনবার আরও বলেন, “যদি শীর্ষ ব্যক্তিরা তদন্ত না করে বা পদক্ষেপ না নেন, তাহলে তারা কি জানে যে তাদেরও অপরাধী তালিকায় যুক্ত হতে পারে এবং তাদেরও আটক করা যেতে পারে?”
রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের কোনো যুদ্ধবন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবির তদন্তের খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতে, রুশ বাহিনী সব সময় ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশন মেনে আচরণ করেছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধবন্দিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অভিযোগও রয়েছে, তবে তার সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করার পর থেকে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, এবং এসবের তদন্ত করা উচিত।