রাতে ঘুমানোর আগে চিয়া বীজ খাওয়ার দারুণ উপকারিতা
চিয়া বীজ এখন স্বাস্থ্য সচেতনদের খাদ্যতালিকায় এক নিয়মিত নাম। এতে রয়েছে ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রনসহ নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। সাধারণত সকালের দিকে এই বীজ খাওয়ার প্রবণতা দেখা গেলেও রাতে ঘুমানোর আগে চিয়া বীজ খাওয়ার কিছু বাড়তি উপকারিতাও রয়েছে, যা শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য বেশ কার্যকর।
রাতে খেলে চিয়া বীজ অন্ত্রে দ্রবণীয় ফাইবার সরবরাহ করে, যা হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখে এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়ার বিকাশে সহায়তা করে। এটি পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে এবং আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করে। ভেজানো চিয়া বীজ পানি শোষণ করে ফুলে ওঠে এবং শরীরকে সারা রাত হাইড্রেটেড রাখে। এতে থাকা ইলেক্ট্রোলাইট উপাদানগুলো যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম শরীরের তরল ভারসাম্য ঠিক রাখে।
রাতের দিকে ক্ষুধা লাগলে অনেকেই অস্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেন, যা ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। অথচ চিয়া বীজের জেলি মতো গঠন ও ফাইবারের উপস্থিতি পেট ভরিয়ে রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করে। এতে থাকা প্রোটিন দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তি দেয় ও শরীরের শক্তি ধরে রাখে।
চিয়া বীজে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা শরীরে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরিতে সহায়তা করে—এই দুই হরমোন ঘুমের গুণমান বাড়াতে কার্যকর। তাই ঘুমানোর আগে এক গ্লাস চিয়া মিশ্রিত পানি খাওয়া শান্তির ঘুমে সহায়ক হতে পারে।
এছাড়া, এতে থাকা ওমেগা-৩, প্রোটিন ও অন্যান্য খনিজ পেশী মেরামত ও ব্যথা হ্রাসে সাহায্য করে। পেশীর ক্র্যাম্প কমায় এবং শারীরিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে। চিয়া বীজ ধীরে ধীরে শক্তি ছাড়ে, ফলে সারা রাত রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং ভোরবেলা অতিরিক্ত দুর্বলতা দেখা দেয় না। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে এবং বিপাকীয় কার্যক্রমও স্বাভাবিক রাখে।
সব মিলিয়ে, চিয়া বীজ শুধু সকালের জন্য নয়—রাতেও খাওয়ার একটি চমৎকার বিকল্প, যা ঘুম, হজম, পেশীর স্বাস্থ্যে এবং রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া