নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে সম্প্রতি একটি উল্লেখযোগ্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে হাজারো মানুষ রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন। এই সমাবেশে প্রায় ১০,০০০ সমর্থক অংশ নেন, যারা সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের সমর্থনে স্লোগান দেন এবং নেপালকে পুনরায় হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
২০০৬ সালে ব্যাপক গণআন্দোলনের পর জ্ঞানেন্দ্র শাহকে তার স্বৈরাচারী শাসন ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়, এবং ২০০৮ সালে সংসদ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে নেপালকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে। তবে, রাজতন্ত্র বিলুপ্তির পর থেকে নেপালে ১৩টি সরকার পরিবর্তন হয়েছে, যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব এবং অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করেছে।
রাজতন্ত্রপন্থী সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরও দেশ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারেনি এবং দুর্নীতি বেড়েছে। অনেকেই মনে করেন, রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলে দেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
সমাবেশটি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়, এবং দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের জন্য মোতায়েন থাকা পুলিশ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা পতাকা ওড়ানো, সঙ্গীত বাজানো এবং রাজতন্ত্রের প্রশংসাসূচক স্লোগান দেন।
যদিও রাজতন্ত্রপন্থীদের সমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। বিশেষজ্ঞদের মতে, তার পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে, জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক হতাশা ও রাজতন্ত্রের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি পাওয়া নেপালের ভবিষ্যত রাজনৈতিক দৃশ্যপটে প্রভাব ফেলতে পারে।
নেপালের এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের অভাব জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করতে পারে, যা পূর্ববর্তী শাসন ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। দেশটির ভবিষ্যত রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা নির্ধারণে এই সমাবেশ ও জনগণের মতামত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।