রসালো কাঁঠালের অসাধারণ পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
মধুমাসের অন্যতম উপহার কাঁঠাল শুধু স্বাদে নয়, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এই সুমিষ্ট ফলটি আমাদের শরীরের নানামুখী উপকার করে। এক কাপ কাঁঠাল খেলে পাওয়া যায় ১৫৭ ক্যালোরি, ৩৮ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ গ্রাম ফ্যাট, ৩ গ্রাম ফাইবার এবং ৩ গ্রাম প্রোটিন। পাশাপাশি এটি ভিটামিন এ, সি, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার এবং ম্যাংগানিজের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
কাঁঠালে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁঠালের ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান প্রদাহ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ফ্ল্যাভোনয়েড ও লিগনান জাতীয় উপাদান প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে।
গ্লাইসেমিক সূচক কম হওয়ায় কাঁঠাল রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না, ফলে এটি ডায়াবেটিকদের জন্যও উপযোগী। ফাইটোকেমিক্যাল যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন ও ট্যানিন ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর। কাঁঠালের দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় ফাইবার হজমে সহায়ক এবং রক্তে গ্লুকোজ বৃদ্ধির হার কমিয়ে দেয়।
ত্বক সুস্থ রাখতে এবং সুর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে কাঁঠালের ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম শরীরকে শিথিল করে ঘুমের মান উন্নত করে। এছাড়াও ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
কাঁঠালের আরেক বড় উপকার হলো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা, যা ত্বক, হাড় ও রক্তনালীর জন্য অত্যন্ত জরুরি। কলা ও আমের তুলনায় এতে নিয়াসিন ও থায়ামিন বেশি থাকে, যা কাঁঠালকে অ্যাথলেটদের জন্য উপযোগী শক্তিদায়ক খাদ্যে পরিণত করে।
এই ফল হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং পেট পরিষ্কার রাখে। কাঁঠালে থাকা কপার থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং থাইরয়েড গ্রন্থিকে সুস্থ রাখে। এমনকি এটি আলসার প্রতিরোধেও সহায়ক, কারণ এতে আছে এসিড কমানোর গুণাগুণ।
সব মিলিয়ে, মৌসুমী এই রসালো ফল কাঁঠাল শুধু স্বাদের জন্য নয়, শরীরের সার্বিক সুস্থতার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাই বুদ্ধিমানের কাজ।