যুবদল নেতার নেতৃত্বে শিক্ষককে টেনে এনে পিটিয়ে রক্তাক্ত!
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে রোববার (১৩ জানুয়ারি) চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, যুবদল নেতার নেতৃত্বে একদল লোক বিদ্যালয়ে ঢুকে সহকারী শিক্ষক মো. বসির উদ্দিনকে জোর করে অফিস কক্ষ থেকে বের করে এনে প্রকাশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। এ সময় তাকে বাঁচাতে গেলে বিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন শিক্ষার্থীও হামলার শিকার হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমারের অফিস কক্ষে বসির উদ্দিনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। হঠাৎ যুবদলের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রনি, উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন আহমেদ, রাকিব হাসান ও তাজিদ মিয়া লাঠিসোটা নিয়ে অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা বসির উদ্দিনকে জোর করে টেনে-হিঁচড়ে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নিয়ে যান এবং এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
এ সময় প্রাক্তন শিক্ষার্থী রিজভী আহমেদ সজীব ঘটনাটি দেখে এগিয়ে এসে তাকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও বেধড়ক পেটানো হয়। স্থানীয় দফতরি ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমার বলেন, “এমন বর্বর ঘটনা আমাদের সবাইকে মর্মাহত করেছে। রাশেদুল ইসলাম রনি ও তার সহযোগীরা কোনো কারণ ছাড়াই অফিস কক্ষে প্রবেশ করে সহকারী শিক্ষককে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছেন।”
তবে যুবদলের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রনি ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক কারণ দাবি করে বলেন, “ওই শিক্ষক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ কারণেই তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
যুবদলের জেলা আহ্বায়ক আতাউর রহমান এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “যদি কোনো যুবদল নেতা এই হামলায় জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিল হোসেন বলেন, “একটি পক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাকে বিতাড়িত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে এ হামলা ঘটেছে। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ও স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামলার শিকার দুইজনের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে জানা গেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।