টানা ১২ দিনের সংঘাত শেষে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির রেশ কাটেনি। ইসরায়েলের হাজারো নাগরিক এখন ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন, যা দেশটির প্রশাসনের জন্য বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বার্তাসংস্থা আনাদোলুর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইরানের হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কারণে মঙ্গলবার (২৫ জুন) পর্যন্ত ইসরায়েলের ট্যাক্স অথরিটির অধীন ক্ষতিপূরণ তহবিলে প্রায় ৩৮ হাজার ৭০০টি দাবি জমা পড়েছে।
এর মধ্যে শুধু ভবন ক্ষতির জন্য দাবি করা হয়েছে ৩০ হাজার ৮০৯টি, যানবাহনের ক্ষতির জন্য ৩ হাজার ৭১৩টি, এবং যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সামগ্রীর ক্ষতির জন্য আরও ৪ হাজার ৮৫টি দাবি জমা পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি, কারণ এখনও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বা ব্যক্তি দাবি জানাতে পারেননি।
ইসরায়েলের পত্রিকা ইয়েদিয়থ আহারোনোথ ও ওয়েবসাইট বেহাদরেই হারেদিম জানায়, ক্ষতিপূরণের দাবির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমা পড়েছে তেল আবিব থেকে – প্রায় ২৪ হাজার ৯৩২টি। এরপর আশকেলন শহর থেকে জমা পড়েছে ১০ হাজার ৭৯৩টি দাবি।
এত বিপুল সংখ্যক দাবি নিষ্পত্তিতে সরকারের কী পরিমাণ ব্যয় হতে পারে – এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আর্থিক হিসাব প্রকাশ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করে, অভিযোগ করে যে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। তবে ইরান তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।
এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি হস্তক্ষেপ করে এবং গত সপ্তাহে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এর ফলেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।
অবশেষে সোমবার গভীর রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার মাধ্যমে ইসরায়েল ও ইরান যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। যদিও যুদ্ধ থেমেছে, কিন্তু তার ক্ষত এখনো ইসরায়েলি জনগণ ও অর্থনীতিকে গভীরভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে।