ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ ১৫ মাসের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা শোনার আনন্দে মেতে উঠেছিলেন গাজাবাসী। কিন্তু এই খুশির মাঝেও থেমে থাকেনি ইসরায়েলি হামলা। বুধবার গাজার খান ইউনিস এলাকায় এবং নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলায় তিনজন নিহত হন।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় দুজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। একই দিনে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি আবাসিক এলাকায় হামলায় আরও একজন প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কিজান রাশওয়ান অঞ্চলে একটি বাড়িতে চালানো বিমান হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণার প্রেক্ষাপটে গাজার মানুষের মধ্যে দেখা গিয়েছিল উৎসবের আমেজ। আল-আকসা হাসপাতালের প্রাঙ্গণ থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষ রাস্তায় নেমে যুদ্ধবিরতির খবর উদ্যাপন করেন। ১৫ মাস ধরে বোমার শব্দে বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে দীর্ঘদিন পর হাসি-আনন্দের দেখা মেলে।
যদিও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে এখনও কিছুদিন বাকি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল এবং হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই চুক্তির আওতায় গাজায় সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি বন্দী জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পথ খুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক নিরাপত্তা দপ্তর জানিয়েছে, গতকাল পুরো গাজা জুড়ে নির্বিচার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এসব হামলায় একদিনেই ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর থেকেই গাজায় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ওই হামলায় ১,২১০ জন নিহত এবং ২৪১ জন জিম্মি করা হয়েছিল। এ সংঘাতের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৬ হাজার ৭০৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
১৫ মাস ধরে চলা এই সংঘাতের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আশা একাধিকবার দেখা দিলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তবে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টায় এবারের চুক্তি কতটা সফল হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।