মঙ্গলবার, ১১ই মার্চ, ২০২৫| ভোর ৫:৪৬

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটলেও সিরিয়ায় ঘাঁটি থেকে সরছে না রুশ সেনারা

প্রতিবেদক
staffreporter
ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪ ১০:৫৭ অপরাহ্ণ

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পিছু হটলেও সিরিয়ায় ঘাঁটি থেকে সরছে না রুশ সেনারা

উত্তর সিরিয়ার সামনের সারি ও আলাউইট পর্বতমালার ঘাঁটিগুলো থেকে রুশ সেনাবাহিনীকে সরিয়ে নিচ্ছে মস্কো। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পরও দেশটিতে রাশিয়ার দুটি প্রধান ঘাঁটি থেকে সেনা সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই। সিরিয়ার চার সরকারি কর্মকর্তার বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

রাশিয়ার দুটি প্রধান ঘাঁটি রয়েছে—লাতাকিয়ার হামিমিম বিমানঘাঁটি ও টারতোস নৌঘাঁটি। সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফেজ আল-আসাদের আমল থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা গড়ে উঠেছিল। তবে বিদ্রোহীদের ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটিতে রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) স্যাটেলাইট ফুটেজে দেখা গেছে, অন্তত দুটি আন্তোনোভ এএ১২৪ কার্গো উড়োজাহাজ হামিমিম ঘাঁটিতে লোড করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) একটি কার্গো বিমান লিবিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন এক সিরীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা।

রাশিয়া সিরিয়ার সামনের সারি থেকে কিছু ভারী সরঞ্জাম ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিয়েছে। তবে দেশটির দুটি ঘাঁটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে সিরীয় ও রুশ সামরিক সূত্র।

রুশ সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত এক সিরীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মস্কো কিছু সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের ফেরত পাঠালেও স্থলভাগে নতুন পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের পুনর্বিন্যাস করছে।

বিদ্রোহীদের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় রুশ সামরিক উপস্থিতি এবং আসাদ সরকারের সঙ্গে রাশিয়ার পুরোনো চুক্তিগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

রাশিয়ার ক্রেমলিন জানিয়েছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের সঙ্গে ঘাঁটি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তবে ঘাঁটিগুলোর দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরে সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল। টারতোস নৌঘাঁটি ভূমধ্যসাগরে রাশিয়ার একমাত্র সরবরাহ হাব, আর হামিমিম ঘাঁটি আফ্রিকা অঞ্চলে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়।

ইস্তাম্বুলের বিশ্লেষক ইওরুক ইসিক জানিয়েছেন, রাশিয়া কার্গো উড়োজাহাজের মাধ্যমে ককেশাস হয়ে লিবিয়ার আল খাদিম বিমানঘাঁটিতে সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে।

রয়টার্সের সাংবাদিকদের মতে, হামিমিম ঘাঁটির সঙ্গে টারতোস ঘাঁটি সংযোগকারী মহাসড়কে রুশ গাড়ি বহর চলাচল করতে দেখা গেছে।

লাতাকিয়ার বাসিন্দা আলি হালুম বলেন, “রাশিয়া, ইরান বা অন্য কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ আমরা চাই না।”

হামিমিম ঘাঁটিতে রুশ সেনাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং সেখানে জেট বিমানও রয়েছে। ৯ ডিসেম্বরের স্যাটেলাইট চিত্রে টারতোস ঘাঁটির কাছে রাশিয়ার তিনটি জাহাজ দেখা গেছে, যার মধ্যে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ফ্রিগেট।

এতে বোঝা যাচ্ছে, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কিছুটা পিছু হটলেও সিরিয়ায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে রাশিয়া আপাতত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ