যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদেরও দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে কতজন বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে অবস্থান করছেন এবং কবে থেকে তাদের ফেরত পাঠানো হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি মার্কিন প্রশাসন।
ঢাকা ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক সূত্রগুলোর বরাতে জানা গেছে, ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস গত মাসে বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি অবহিত করেছে এবং এ সংক্রান্ত একটি কূটনৈতিক পত্র পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে, যেন বাংলাদেশি নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে অসম্মানজনক উপায়ে ফেরত না পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পরই অবৈধ বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর সময় যে কঠোরতা দেখানো হয়েছে, তা যেন বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে না ঘটে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি ও কানেটিকাটে এই সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংক্রান্ত দপ্তরগুলো— অফিস অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট— এসব অবৈধ অভিবাসীদের তদারকি করে থাকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছে এবং সরকারও ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। তবে বাংলাদেশ চায় না, অন্য কিছু দেশের মতো হাতকড়া পরিয়ে নাগরিকদের দেশে ফেরত পাঠানো হোক। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে।
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেভাবে অভিবাসন নীতি বাস্তবায়ন করছেন, তাতে আগাম কিছু অনুমান করা কঠিন। কিছু দেশের ক্ষেত্রে যেভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমনটা নাও হতে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা তুলনামূলক কম এবং তারা সাধারণত অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকেন না। ফলে তাদের সম্মানজনকভাবে ফেরত পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে।