যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল হলে ফেঁসে যাবেন ১৬ লাখ ভারতীয়
যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়ার শর্তে নাগরিকত্ব পাওয়ার ঐতিহাসিক অধিকার বাতিল করার পরিকল্পনা করেছেন দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমন পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে বিপাকে পড়বেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১৬ লাখ ভারতীয়-আমেরিকান।
মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার বিধান দেড়শ বছরের বেশি সময় ধরে চালু রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করা কোনো শিশুর বাবা-মা প্রবাসী হলেও সেই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পায়। তবে ট্রাম্পের মতে, এই আইন বাতিল করা প্রয়োজন।
২০২২ সালের মার্কিন আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে প্রায় ৪৮ লাখ ভারতীয়-আমেরিকান বসবাস করছেন। এদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ, অর্থাৎ ১৬ লাখ যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এই বিশাল জনগোষ্ঠী নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে পড়বেন।
ট্রাম্প এই আইনকে “হাস্যকর” বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রথম মেয়াদে তিনি এই আইনের পরিবর্তনের পক্ষে কথা বললেও তা কার্যকর করতে পারেননি। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে প্রথম নির্বাহী আদেশের অংশ হিসেবে তিনি আইনটি বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেছেন, “আমি পরিবারগুলো ভাঙতে চাই না। কিন্তু সবাইকে তাদের উৎস দেশে ফেরত পাঠানোই একমাত্র সমাধান।”
আইনজীবী রাসেল এ স্টেমেটস বলেছেন, ট্রাম্প এবং তার সমর্থকদের মতে, এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার জন্য কঠোর শর্ত থাকা উচিত। “বার্থ টুরিজম” উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, অনেকেই সন্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বানাতে এসে এখানে সন্তান জন্ম দেন এবং পরে নিজ দেশে ফিরে যান।
তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল হলে মার্কিন বাবা-মায়েরাও হয়রানির শিকার হতে পারেন। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের মতে, এই প্রক্রিয়া নাগরিকত্ব প্রমাণে জটিলতা সৃষ্টি করবে এবং ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
তথ্যসূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড