বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত বাড়তি শুল্ক হার কমাতে আবারও বৈঠকে বসতে পারে দুই দেশের নীতিনির্ধারকরা। আগামী সপ্তাহেই এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বাংলাদেশ এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব ও যুক্তি উপস্থাপন করে। এখন প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
ঢাকায় সরকারের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে ২৭ শতাংশ শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশ করে, যার ফলে পণ্য আমদানিকারকদের মুনাফার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতের আমদানিকারকরা শুল্ক কমানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে দেনদরবার করতে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
এছাড়াও, মার্কিন গম, তুলা ও সয়াবিন রফতানিকারকদের— যাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে কিংবা ভবিষ্যতে সম্ভাবনা রয়েছে— তাদেরও বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে অনুরোধ জানাতে বলা হয়েছে।
৩ জুলাই অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান এবং ইউএসটিআরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ব্রেন্ডন লিঞ্চ।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে, যা ইতিমধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘ন্যায়সঙ্গত শুল্ক হার’ চেয়েছে। ভিয়েতনামের মতো দেশের সঙ্গে যেখানে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতির পরও মাত্র ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে মাত্র ছয় বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও এত বেশি শুল্কের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ যে চারটি প্রস্তাব দিয়েছে:
এর সঙ্গে শ্রম খাত সংস্কার ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলো বিশ্লেষণ করে দেখবে বলে আশা করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে আগামী বুধবার, ৯ জুলাই আবারও দুপক্ষের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা হতে পারে।
যদি সেদিন কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে বাংলাদেশ চায় বাড়তি শুল্ক স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ানো হোক। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তি শুল্ক হার ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে।