বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক রফতানিতে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশটি প্রতিযোগী সব দেশকে পেছনে ফেলে রফতানি প্রবৃদ্ধিতে শীর্ষে উঠে এসেছে। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ সময়ে বাংলাদেশ ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫.৯৩ শতাংশ বেশি।
চীন, ভিয়েতনাম, ভারতসহ শীর্ষ রফতানিকারকদের তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি। চীন জানুয়ারিতে ১৬০ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করেছে, যা ১৩.৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। ভিয়েতনাম ১৪৪ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করেছে, প্রবৃদ্ধি ১৯.৯০ শতাংশ।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়ানোর ফলে তৈরি পোশাক খাতের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তবে এই গতি ধরে রাখতে পণ্যের বহুমুখীকরণ গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পোশাক বাজার। ২০২৪ সালের শেষ দিকে রফতানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি না হলেও ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রফতানি ২৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে চলতি বছরে দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় ক্রয়াদেশ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন। বিশেষ করে চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ক্রেতারা নতুন উৎসের সন্ধান করছে। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা মনে করছেন, এতে তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবৃদ্ধির আরও বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে মোট ৭২০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি। যদিও ২০২৩ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশের রফতানি প্রবৃদ্ধি কমে গিয়েছিল, তবে বছরের শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ফিরে আসে। নভেম্বরে ৬১৩.৯১ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি হয়, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখতে নতুন বাজার ও বহুমুখী পণ্য উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।