বাংলাদেশে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে, বিশেষত উত্তরাঞ্চলে এবং রাজধানীসহ দেশের অনেক অঞ্চলে। গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের দেখা মিলছে না এবং উত্তুরে ঠাণ্ডা বাতাসও চলতে থাকায় শীত আরও বাড়ছে। গত শুক্রবার দেশের ১৩ জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়, যার কারণে জনজীবনে ব্যাপক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানাচ্ছে, কুয়াশার কারণে দিন এবং রাতের তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কমে যাওয়ায় শীতের অনুভূতি প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি হচ্ছে। এর ফলে শ্রমজীবী, নিম্ন আয়ের মানুষ এবং বয়স্করা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। গতকাল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশে চলমান শৈত্যপ্রবাহের অন্যতম তীব্রতম তাপমাত্রা।
কুয়াশা পুরোপুরি কাটতে অন্তত ৩-৪ দিন সময় লাগবে, ফলে তীব্র শীত আরও কয়েকদিন থাকবে বলে আভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এই সময়কালে ঘন কুয়াশা থাকার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নদী পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে রেলপথে দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষও কুয়াশায় গাড়ি চালানোর জন্য কিছু সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করেছে।
শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, বিশেষত শিশু এবং বয়স্কদের মধ্যে। ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীদের চিকিৎসা নেওয়া চলছে। এর মধ্যে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শীতজনিত সমস্যার কারণে খাদ্য উৎপাদনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যেমন কৃষকদের বোরো ধানের বীজতলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, শীতের তীব্রতা বিশেষ করে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে উঠেছে। কুয়াশা এবং ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে এসব মানুষের কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে, ফলে তাদের জীবিকা এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।