২০২২ সালে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার ঋষভ পান্ত। সে সময় তার ক্রিকেটে ফেরা তো দূরের কথা, হাঁটা-চলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলার শঙ্কা ছিল। এক বছরের বেশি সময় মাঠের বাইরে কাটিয়ে সম্প্রতি আবারও আলোচনায় এসেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত ভারতের প্রথম টেস্টে পরপর দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে গড়েছেন নতুন ইতিহাস। সেঞ্চুরির পর নিজের পছন্দের ‘সামারসল্ট’ ডিগবাজি দিয়ে উদযাপন করেন তিনি, যা নিয়েও কথা বলেছেন তার চিকিৎসক দিনশো পার্দিওলা।
ঋষভ পান্ত সেই ভয়ংকর দুর্ঘটনার সময় নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। দিল্লি-দেরাদুন হাইওয়ের রুরকি এলাকায় গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে উল্টে গিয়ে আগুন ধরে যায়। শরীরের একাধিক অংশ পুড়ে যায়, মাথায় গুরুতর আঘাত এবং ডান হাঁটুর লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। যুক্তরাজ্যের ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্থোপেডিক সার্জন ড. পার্দিওলা জানান, পান্তের শরীরের বড় অংশে ছিলে যাওয়া ও কাচের টুকরোর আঘাত ছিল, হাঁটু নড়ে গিয়েছিল, গোড়ালিতেও ছিল জখম। এমনকি কিছুদিন পর তিনি নিজ হাতে ব্রাশও ধরতে পারতেন না।
চিকিৎসক দিনশো বলেন, “পান্ত বেঁচে গেছেন—এটা এক ধরনের মিরাকল, তার শরীর অক্ষত আছে—এটা দ্বিতীয় মিরাকল, আর ক্রিকেটে ফিরে ইতিহাস গড়া হচ্ছে তৃতীয় মিরাকল। আমরা প্রথমে শুধু চেয়েছিলাম সে যেন হেঁটে চলতে পারে। তারপর ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া শুরু করি—প্রথমে সার্জারি, পরে থেরাপি। আমরা বলেছিলাম, তার খেলায় ফিরতে অন্তত ১৮ মাস সময় লাগবে।”
আইপিএলে প্রত্যাশামতো পারফর্ম করতে না পারলেও শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি দিয়ে আসর শেষ করেন পান্ত। সেঞ্চুরির পর তিনি সামারসল্ট দিয়ে উদযাপন করেন, যা আবারও দেখা যায় ইংল্যান্ডের মাটিতে। চিকিৎসক দিনশো পার্দিওলা সেই ডিগবাজি দেখেছেন এবং বলেছেন, “এটা প্রশিক্ষণের ফল, দেখতে ভালো, কিন্তু অপ্রয়োজনীয়।”
তবে চিকিৎসকের মতে, এখনকার পান্ত অনেক বেশি পরিপক্ব ও ফিটনেস নিয়ে সচেতন। দিনশো বলেন, “পান্ত এখন অনেক পরিণত। যে কেউ মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে আসে, তার জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। আমি নিশ্চিত, এখন সে নিজের শরীর ও ফিটনেসকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। বড় অপারেশনের পর অনেক অ্যাথলেটই আগের চেয়েও ভালো ফর্মে ফেরে—পান্ত তারই এক দৃষ্টান্ত।”