মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সেনাসহ জেনারেল আটক
মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশের মংডু শহর দখলে নেওয়ার পর শত শত সরকারি সেনা এবং তাদের নেতৃত্বদানকারী কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে আটক করেছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
আরাকান আর্মি জানিয়েছে, রোববার (১০ ডিসেম্বর) তারা মংডু শহরের জান্তা বাহিনীর শেষ ঘাঁটি বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ দখল করে। দীর্ঘ ৫৫ দিনের লড়াইয়ের পর এই দখল সম্পন্ন হয়। এই অভিযানে ৪৫০ জনের বেশি সরকারি সেনা নিহত হয়েছে এবং বিদ্রোহীরা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ দখলে নিয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনসহ আটককৃত সেনাদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীও। এএ জানিয়েছে, ঘাঁটি দখলের কয়েক ঘণ্টা আগে জান্তা বাহিনীর সৈন্যরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওতে তারা জান্তা নেতৃত্বের কাছে তাদের সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানায়। তারা অভিযোগ করে যে, তিন মাস ধরে আটকে থাকলেও তাদের উদ্ধারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
জেনারেল থুরেইন তুন যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের পরিত্যাগ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সাবেক সেনা ক্যাপ্টেন জিন ইয়াও ইরাবতীকে বলেন, এই জেনারেল তার ঊর্ধ্বতনদের প্রতি অটল আনুগত্য দেখানোর জন্য পরিচিত। তবে যুদ্ধক্ষেত্রের প্রকৃত পরিস্থিতি এবং আহত সৈন্যদের অবস্থা সম্পর্কে তিনি নেতাদের সঠিক তথ্য জানাননি।
আরাকান আর্মি জানিয়েছে, মংডু শহর দখলের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় ২৭৫ কিলোমিটার এলাকাই এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। ঘাঁটিটি আগে জান্তার অধীনে ৭০০ জনের বেশি পুলিশ ও সেনা পরিচালিত করত।
থুরেইন তুন ২০২১ সালে মান্দালেতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী অভিযানের জন্য কুখ্যাত। এছাড়া রাখাইনে জান্তার পক্ষে রোহিঙ্গাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগেও অভিযুক্ত।
আরাকান আর্মি তাদের দখল করা ঘাঁটি এবং আটক সেনাদের ছবি প্রকাশ করেছে। সেইসঙ্গে উদ্ধার করা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদের ছবিও প্রকাশ করেছে, যা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার জন্য বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।