সোমবার, ৩রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫| রাত ১২:০৬

মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির শাস্তি সংবিধানে সংযোজনের প্রস্তাব পার্থের

প্রতিবেদক
staffreporter
নভেম্বর ২৪, ২০২৪ ১২:৫৫ অপরাহ্ণ

মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির শাস্তি সংবিধানে সংযোজনের প্রস্তাব পার্থের

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ সংবিধানের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেছেন, মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান সংবিধানে সংযোজন করা উচিত। শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে: সংবিধান সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই প্রস্তাব দেন।

পার্থ বলেন, ‘‘আমি মনে করি, আমাদের রাষ্ট্রধর্ম যদি ইসলাম হয়ে থাকে, তাহলে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করলে শাস্তির বিধান সংবিধানে থাকতে হবে। জাতির জনক নিয়ে কটূক্তি করলে যদি পাঁচ থেকে ১০ বছরের সাজা হয়, তবে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করলেও শাস্তি থাকা উচিত। এতে অন্য কোনো ধর্মকেও ছোট করা হবে না। কারণ সংবিধান বলছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলেও অন্য ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘গত দুই দশকে আধুনিকতার নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার প্রবণতা বেড়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের পর থেকেই আমরা দেখেছি, কেউ কেউ ধর্ম, বিশেষ করে মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি করার চেষ্টায় লিপ্ত। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সংবিধানে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে সংযোজন করা প্রয়োজন।’’

মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো ইসলামিক আদালত চালুর প্রস্তাব রেখে পার্থ বলেন, ‘‘যারা নিজেদের সমস্যা ইসলামিক আইন অনুযায়ী সমাধান করতে চায়, তাদের জন্য ইসলামিক আদালতের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা সম্ভব হবে। আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে রক্ষা করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’

সংবিধানকে সময়োপযোগী করার তাগিদ দিয়ে পার্থ বলেন, ‘‘বর্তমান সংবিধান একটি ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় পরিণত হয়েছে। এই সংবিধান বারবার শাসকগোষ্ঠীর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এটি ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং, সংবিধানের সংস্কার সময়ের দাবি। তবে এই কাজ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারকেই করতে হবে।’’

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ অপরিহার্য। এটি সরকারের ক্ষমতা ভারসাম্যের পাশাপাশি সুশাসন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব ও অধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলোও সংবিধানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ থাকা উচিত।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বৈষম্য করা যাবে না—এমন বিধান সংবিধানে থাকা জরুরি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়েও সংবিধানে ব্যবস্থা রাখা উচিত। জার্মানিতে যেমন ফ্যাসিবাদী দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনই আমাদেরও এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিজেপির মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মতিন প্রকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস মাতাব্বর, বাংলাদেশ জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক মো. হারুন-অর-রশিদ, এবং বাংলাদেশ জাতীয় ছাত্র সমাজের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম।

পার্থ তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, ‘‘মানুষের জন্য সংবিধান, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়। একটি সংবিধান যদি মানুষের অধিকারের সুরক্ষা না দেয়, তবে মানুষ সেই সংবিধান প্রত্যাখ্যান করবেই।’’

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ