ভিন্নমতের ২০ লাখ কর্মচারীকে ৮ মাসের বেতনসহ বিদায় নিতে বললেন ট্রাম্প!
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল প্রশাসনে কর্মরত প্রায় ২০ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউস থেকে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিতরণ করা এক সার্কুলারে বলা হয়েছে, যারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না, তারা যেন ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পদত্যাগ করেন। যারা স্বেচ্ছায় বিদায় নেবেন, তারা আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতনসহ চাকরি ছাড়তে পারবেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হয়েছে, বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে এত সংখ্যক ফেডারেল কর্মচারীর প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, ডেমোক্র্যাট শিবিরের প্রতি অনুগত কর্মকর্তারা থাকলে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের নীতিগুলো বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে উঠবে। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন এ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে রিপাবলিকান নীতিনির্ধারকরা।
জানা গেছে, হোয়াইট হাউসের বিতরণ করা ই-মেইলের শিরোনাম ছিল ‘ফোর্ক ইন দ্য রোড’। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের প্রতি আনুগত্য দেখানোই ফেডারেল কর্মচারীদের দায়িত্ব। যারা প্রশাসনের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ান, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। তবে বরখাস্তের কঠোর পথে না গিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন সম্মানজনকভাবে চাকরি ছাড়ার বিকল্প সুযোগ দিচ্ছে, যা আগামী অর্থবছর পর্যন্ত বেতনসহ কার্যকর থাকবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি মূলত প্রশাসনিক সংস্কারের নামে বিরোধীদের সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা। হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, ইতোমধ্যে কিছু কর্মকর্তার বরখাস্তের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে তাদের ওপর বরখাস্তের তকমা না লাগিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের একটি পথ দেখানো হচ্ছে।
এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্কিন রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডেমোক্র্যাট শিবির বলছে, এটি যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর সরাসরি আঘাত। তারা অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে কেবল নিজের অনুগতদের দ্বারা পূর্ণ করতে চাইছে, যা প্রশাসনিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, এই নির্দেশনার বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাটরা কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত কতটা কার্যকর হয়।