ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারতের পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল কিংবা রসুন বন্ধ করলেই বাংলাদেশের মানুষ অসহায় হয়ে পড়বে—এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তিনি বলেন, “আপনারা মনে করেন, পেঁয়াজ-রসুন-তেল বন্ধ করে দিলে আমরা রান্নায় ব্যবহার করতে পারব না, এ ধারণা আপনাদের দুঃস্বপ্ন। দেশের মানুষ এসব নিজেরাই উৎপাদন করতে জানে। অন্য দেশ থেকেও প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি সম্ভব।”
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশানে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, গরু রপ্তানি বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশে গবাদিপশুর খামার বাড়ার উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “এক কোরবানির ঈদেই এ দেশে ১ কোটি ২০ লাখ গবাদিপশু কোরবানি হয়।”
প্রতিবেশী ভারতের উদ্দেশে রিজভী বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ শ্রমপ্রিয়। তারা কষ্ট করে নিজেদের চাহিদা মেটাতে পারে। ভারত ছাড়া পৃথিবীতে আরও অনেক দেশ আছে, যারা পেঁয়াজ, রসুন বা তেল সরবরাহ করতে পারে। তাই এসব পণ্য বন্ধ করেও বাংলাদেশকে অস্থির করা যাবে না। বরং ভারতীয় ব্যবসাগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
ভারতের মার্কেট ও হাসপাতালের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশিরা কলকাতায় গিয়ে চিকিৎসা করত, কেনাকাটা করত। ভারতীয় হাসপাতাল ও মার্কেটগুলোতে এখন লোকজন নেই। অথচ বাংলাদেশিরা থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বা অন্য দেশে চিকিৎসা নিতে শুরু করেছে। ভারতের হিংসাত্মক মনোভাবের কারণে মানুষ সেখানে আর যেতে চায় না।”
ভারতীয় চ্যানেলের একটি প্রতিবেদনে চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ হিসেবে দাবি করার বিষয়েও রিজভী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের মিথ্যা প্রচার সহ্য করা হবে না। প্রয়োজনে আমরাও বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা দাবি করব। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি, কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশের কোনো অংশ দাবি করার স্পর্ধা মেনে নেওয়া যাবে না।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আওয়াল, রাজু আহমেদ প্রমুখ।