ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এরই ধারাবাহিকতায় উত্তরপ্রদেশে ভেঙে দেওয়া হয়েছে একটি ১৮৫ বছরের পুরোনো মসজিদের একাংশ। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলার নূরী জামে মসজিদের একটি অংশ স্থানীয় প্রশাসন ভেঙে দিয়েছে। প্রশাসনের দাবি, মসজিদের ওই অংশটি বেআইনিভাবে বান্দা-বাহরাইচ হাইওয়ের সীমানায় নির্মাণ করা হয়েছিল। গণপূর্ত বিভাগ জানায়, মসজিদ কর্তৃপক্ষকে গত ১৭ আগস্ট নোটিশ দেওয়া হলেও তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অবৈধ অংশ সরায়নি।
মসজিদ কমিটি বিষয়টি নিয়ে এলাহাবাদ হাইকোর্টে আবেদন করলেও আদালতের শুনানি শুরুর আগেই প্রশাসন এই পদক্ষেপ নেয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অবিনাশ ত্রিপাঠি দাবি করেছেন, মসজিদের যে অংশ ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেটি মাত্র তিন বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল।
বিচারবিভাগীয় নির্দেশ ছাড়া কোনো স্থাপনা ভাঙার বিষয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তা সত্ত্বেও বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে "বুলডোজার-জাস্টিস" চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের সামভাল এলাকায় মুঘল আমলের একটি মসজিদের ওপর সমীক্ষা পরিচালনা করতে গিয়ে স্থানীয় জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতি ঘিরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের বিষয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা রয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্র সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সতর্ক করে বলেছিলেন, মুসলমানদের অধিকার রক্ষা না করলে ভারত ভেঙে যেতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী বারবার ভারতের সংখ্যালঘু এবং ভিন্নমতাবলম্বীদের অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্যরা এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে।