ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ভারতকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। তিনি বলেন, "বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়, সেটা সিদ্ধান্ত নেবে। একইভাবে ভারতকেও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা আশপাশ থেকে দু’চারজন কী বলল, তা নিয়ে মনোযোগ না দিয়ে আমাদের সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছি।"
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এই মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, "এটা দুই পক্ষের বিষয়, আর এতে কোনো দোষ নেই। আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে, আমরা ভারতের সঙ্গে একটি গুড ওয়ার্কিং রিলেশানস চাই, যেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকবে এবং দু’দেশের স্বার্থ মেনে চলা হবে।"
এছাড়া, তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের বক্তব্যের পর বাংলাদেশে বিভিন্নজনের সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি, তবে তিনি এটি নিশ্চিত করেন যে, এমন মন্তব্য উভয় পক্ষেই হচ্ছে। তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মন্তব্য এবং ভারতের এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এসব চলতে থাকলেও আমাদের চেষ্টা থাকবে সম্পর্ক ভালো রাখার।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু বক্তব্যের প্রভাব নিয়েও আমাদের বক্তব্য রয়েছে।" তৌহিদ হোসেন দাবি করেন, ভারতের বিভিন্ন মহলে এসব বক্তব্য সম্পর্কে জানেন এবং বলেন, "এগুলো সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর এবং আগুনে ঘি ঢালার মতো।"
ভারতীয় ভিসা নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভিসা দেওয়া ভারতের অধিকার এবং যদি তারা কাউকে ভিসা না দেয়, বাংলাদেশ বিকল্প খুঁজে নেবে।
তিনি ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগের ব্যাপারেও বলেন, "এটি ভারতীয় মিডিয়া দ্বারা বিকৃত তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত, যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয় বাংলাদেশই নিয়ন্ত্রণ করবে, আর ভারতের সংখ্যালঘুদের বিষয় ভারতের অধিকার।"
এভাবে তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করেছেন।