যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরেও সৌদি আরবকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন। গতকাল শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন যে, সৌদি আরব তার সম্ভাব্য প্রথম গন্তব্য হতে পারে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদেও তিনি প্রথম সফরে সৌদি আরবেই গিয়েছিলেন, যা মার্কিন রাষ্ট্রপ্রধানদের ঐতিহ্য থেকে ভিন্ন। সাধারণত, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর হিসেবে যুক্তরাজ্যে যাত্রা করেন।
ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক তার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, আগের সফরে সৌদি আরব থেকে শত কোটি ডলারের পণ্য ক্রয়ের প্রস্তাব এসেছিল। এ প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, "যদি সেই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হয়, আমি আবারও সৌদি আরব যেতে প্রস্তুত।"
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি ও নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে এক বিশেষ স্থান ধরে রেখেছিল। তবে ট্রাম্পের বিদায়ের পর জো বাইডেনের শাসনামলে এই সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়ে যায়। বিশেষত, সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর রিয়াদ-ওয়াশিংটনের সম্পর্ক টানাপোড়েনে পড়ে। যদিও বাইডেন তার শাসনামলের পরবর্তী সময়ে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করেছিলেন, তা কখনো আগের উষ্ণতায় ফিরতে পারেনি।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের গভীরতায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ট্রাম্পের জামাতা ও উপদেষ্টা জারেড কুশনারের ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব এ সম্পর্ককে আরও মজবুত করেছিল। খাশোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি আরব সরাসরি অভিযুক্ত হলেও ট্রাম্প এ বিষয়ে কোনো নিন্দা জানাননি। বরং, ইয়েমেন যুদ্ধের জন্য সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটে মার্কিন সমর্থন বন্ধে কংগ্রেসের পদক্ষেপকেও ব্যর্থ করেন তিনি।
চমকপ্রদ তথ্য হলো, দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের আগেই সৌদি আরবে একটি বিলাসবহুল টাওয়ার নির্মাণের কাজ ট্রাম্প অর্গানাইজেশন বাগিয়ে নিয়েছে। এটি আবারও প্রমাণ করে, ট্রাম্পের প্রশাসন এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা গভীর।
ট্রাম্পের সম্ভাব্য সৌদি সফর শুধু তার কৌশলগত অগ্রাধিকারই নয়, বরং বিশ্ব রাজনীতিতে এক ব্যতিক্রমী বার্তা দিচ্ছে। তিনি স্পষ্টতই দেখাচ্ছেন যে, সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করাই তার কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু।