বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে শেষ করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। দীর্ঘদিন ধরে বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়া অত্যন্ত দীর্ঘ হওয়ায় এতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছে কমিশন। গতকাল শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসনে মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করতে এবং মধ্য পদোন্নতির ক্ষেত্রে একটি স্থায়ী নীতিমালা বা আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে, যাতে এটি সহজে পরিবর্তন করা না যায়। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি, বিশেষ করে বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে। বর্তমান দীর্ঘ নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হলে পরীক্ষার কাঠামোতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
কমিশন সুপারিশ করেছে, বিসিএস পরীক্ষার প্রক্রিয়াটি একটি ব্যাপক লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে। এছাড়া, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি নির্দিষ্ট বার্ষিক ক্যালেন্ডার নির্ধারণেরও প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অনুসারে বিসিএসের প্রতিটি ধাপ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে।
প্রস্তাবিত সময়সূচি অনুযায়ী, জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে বিসিএস প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এর ফল প্রকাশ, জুন মাসের দ্বিতীয়ার্ধে ১০ দিনব্যাপী লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্পন্ন হবে। এরপর এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে গেজেট প্রকাশ করা হবে। এরপর নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জুলাই মাসের ১ তারিখে মন্ত্রণালয়ে যোগ দেবেন এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং সেন্টারে (পিএটিসি) ফাউন্ডেশন কোর্স শুরু করবেন।
এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে বিসিএস পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রিতা কমবে এবং সরকারি চাকরিতে যোগদানের ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে বলে মনে করছে কমিশন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সুপারিশ কার্যকর হলে মেধাবী প্রার্থীরা দ্রুত কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং প্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।