বিশ্ব ব্রেইল দিবস: অন্ধদের শিক্ষার সুযোগ
আজ ৪ জানুয়ারি, বিশ্ব ব্রেইল দিবস। এই দিনটি অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষার সুযোগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় এবং ব্রেইল পদ্ধতির গুরুত্বের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে। ব্রেইল পদ্ধতি তাদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের মেধা ও দক্ষতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
ব্রেইল পদ্ধতির আবিষ্কারক লুইস ব্রেইল ১৮০৯ সালের ৪ জানুয়ারি ফ্রান্সের কুপভেরি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিজে তিন বছর বয়সে দৃষ্টিহীন হন, তবে তার জীবন থেমে থাকেনি। তিনি প্যারিসের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য তৈরি স্কুলে ভর্তি হন এবং অন্ধদের জন্য একটি নতুন শিক্ষা পদ্ধতি তৈরি করার ভাবনা পান। একদিন তিনি শিখলেন যে, ফরাসি সৈন্যরা শত্রুর কাছ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে রাতে যোগাযোগের জন্য একটি কোড ব্যবহার করত, যা বিন্দু ও ছোট লাইনের সমষ্টি ছিল। এই কোডটির ধারণা থেকে তিনি ব্রেইল পদ্ধতি তৈরি করেন।
ব্রেইল পদ্ধতিতে ছয়টি ডট দিয়ে অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্ন তৈরি করা হয়, যা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা তাদের আঙুল দিয়ে স্পর্শ করে পড়তে পারেন। ১৮২৭ সালে তিনি প্রথম ব্রেইল বই প্রকাশ করেন, তবে তার পদ্ধতি তখনকার সময়ে বিশেষভাবে প্রচলিত ছিল না। কিন্তু আজকের দিনে, ব্রেইল পদ্ধতি অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য একটি অপরিহার্য শিক্ষা পদ্ধতি হয়ে উঠেছে। এটি তাদের জীবনে নতুন সুযোগ ও দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
বর্তমানে ব্রেইল পদ্ধতিতে বিভিন্ন ভাষায় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এবং এটি এমন প্রযুক্তির মাধ্যমেও ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমন রেফ্রেবল ব্রেইল ডিসপ্লে, যা কম্পিউটার পর্দা ও অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়।
লুইস ব্রেইলের এই মহান আবিষ্কারটি আজ বিশ্বব্যাপী স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। তার দৃষ্টি পরিবর্তনকারী পদ্ধতিটি আজ অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষার নতুন দরজা খুলে দিয়েছে।