যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার শেষ ভাষণে দেশটির গণতন্ত্র ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বাইডেন বলেন, মার্কিন সমাজে একটি বিপজ্জনক গোষ্ঠী শাসনের উত্থান হতে চলেছে, যা গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি। তিনি সরাসরি কারও নাম উল্লেখ না করলেও স্পষ্টতই ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিজাত ধনী গোষ্ঠীর দিকে, যারা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনকে সমর্থন করছেন।
বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বাইডেন বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা ও সম্পদ কিছু মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়ার একটি ভয়ঙ্কর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটি আমাদের মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ভয়ানক হুমকি। আমরা যদি এই প্রবণতা ঠেকাতে অগ্রণী ভূমিকা না নিই, তবে আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।”
বাইডেন আরও বলেন, “গোষ্ঠীশাসন কেবল অর্থনৈতিক অসমতার জন্ম দিচ্ছে না, এটি আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি নড়বড়ে করে দিচ্ছে। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বিপন্ন হচ্ছে।” তিনি উল্লেখ করেন, সামাজিক মাধ্যমের মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর যে প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
যদিও বাইডেন তার ভাষণে কাউকে সরাসরি অভিযুক্ত করেননি, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি স্পষ্টতই ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, এবং মার্ক জাকারবার্গের মতো ব্যক্তিদের উদ্দেশ্য করে বক্তব্য দিয়েছেন। এই বিশাল ধনী গোষ্ঠী ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে, যা বাইডেনের মতে, গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।
বাইডেন তার বিদায়ী ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সংশোধনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি কোনো প্রেসিডেন্ট তার দায়িত্ব পালনকালে কোনো অপরাধ করেন, তবে তার বিচার হবে। ক্ষমতার অপব্যবহার আর সহ্য করা যাবে না।”
বাইডেন তার প্রশাসনের অর্জনগুলো উল্লেখ করে বলেন, “আমরা পরিবেশ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠী তা নষ্ট করতে চাইছে। এদের কারণেই পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”
২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় আসবেন, তখন বাইডেনের এই ভাষণ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। তবে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের সতর্কবার্তা কি কোনো প্রভাব ফেলবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।