বিজয় দিবস শুধু একটি তারিখ নয়, এটি বাঙালির আত্মপরিচয়, বীরত্ব এবং সংগ্রামের প্রতীক। ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের সেই দিন, যা ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের বীরত্বের মাধ্যমে অর্জিত। তরুণ প্রজন্মের কাছে এটি কেবল একটি স্মৃতি নয়, বরং স্বাধীনতার গুরুত্ব বুঝতে এবং ভবিষ্যৎ গড়ার প্রেরণার উৎস। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দাঁড়িয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা যে প্রত্যাশা ও ভাবনার কথা জানিয়েছেন, তা আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়।
অর্থনীতি বিভাগের রুকসানা রাহি মনে করেন, একটি বৈষম্যহীন এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে সবার আগে নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তিনি আশা করেন, ছাত্র-জনতার বাকস্বাধীনতা এবং সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। আইন মেনে চলা এবং অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার পথ প্রশস্ত করতে পারে বলে তার বিশ্বাস।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শরিফ আহম্মেদ বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও বৈষম্য ও অসমতা দূর করা সম্ভব হয়নি। সব শ্রেণি ও ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা তার স্বপ্নের বাংলাদেশের ভিত্তি।
অর্থনীতি বিভাগের শায়লা আক্তার মিম স্বপ্ন দেখেন একটি ঐক্যবদ্ধ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের, যেখানে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগের সেই চেতনায় আমাদের শপথ হোক বৈষম্যহীন, সুশাসিত ও শক্তিশালী দেশ গড়ার।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মোঃ রাব্বি বিশ্বাস করেন, বিজয় দিবস শুধু ইতিহাস নয়, এটি ভবিষ্যৎ গড়ার একটি প্রেরণা। তিনি একটি অসাম্প্রদায়িক, মানবিক এবং টেকসই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন। যেখানে শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং গবেষণার উন্নতির মাধ্যমে সমাজ এগিয়ে যাবে। তিনি আশা করেন, দুর্নীতিমুক্ত এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে একটি উন্নত দেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে, যেখানে প্রতিটি শিশুর মানসম্মত শিক্ষা ও প্রতিটি মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত হবে।
বিজয় দিবসের এই প্রতিজ্ঞা যেন আমাদের প্রতিদিনের কাজ ও চিন্তার অংশ হয়ে ওঠে। একাত্তরের চেতনা বুকে ধারণ করে আমরা একসঙ্গে এগিয়ে গেলে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।