বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য পৃথক সচিবালয় জরুরি: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পৃথক সচিবালয়ের বিকল্প নেই। বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হলে স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত হবে, বিচার বিভাগ হবে হস্তক্ষেপমুক্ত এবং স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে যে অসাম্পূর্ণ সংস্কার ছিল, তা পূরণ করাই এখন অন্তর্বর্তী সরকারের মূল লক্ষ্য। এই সংস্কারের সুযোগ এসেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে, যা হারানো যাবে না।
রোববার বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও গণহত্যা জনগণকে অবিচারের বিরুদ্ধে আরও সোচ্চার করেছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করছে। তিনি বলেন, জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে অপরাধীদের বিচারের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস অতীতের সরকারগুলো বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে, বর্তমান সরকার বিচার প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সেমিনারে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টিফান লিলার।
সেমিনারে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, আইনজীবী, রেজিস্ট্রি কর্মকর্তা এবং দেশের বিভিন্ন জেলার বিচারকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ সেমিনারে বলেন, বিচার বিভাগের সত্যিকার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পৃথক সচিবালয় গঠন অত্যাবশ্যক। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন অন্তর্বর্তী সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে, যা জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সত্তা।