বিচারের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে আসার সুযোগ নেই: খেলাফতে মজলিশ
খেলাফতে মজলিশের মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
শনিবার (২৩ মার্চ) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সংলাপে আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, “ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের সহযোগীদের আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। আগে তাদের বিচার হতে হবে। যদি কেউ নিরপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে সে রাজনীতিতে ফিরতে পারে, কিন্তু এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগকে কোনোভাবেই পুনর্বাসন করা যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এই দলটি মানুষ হত্যা করেছে, ছাত্র হত্যা করেছে। তারা এখনো ক্ষমা চায়নি, বরং নিজেদের অপকর্মের বিচার এড়াতে চাচ্ছে।”
সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে খেলাফতে মজলিশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে মহাসচিব বলেন, “আমরা গণপরিষদের পক্ষে নই। প্রয়োজনীয় সংস্কার অধ্যাদেশের মাধ্যমে বা উচ্চ আদালতের মতামত নিয়ে করা সম্ভব। দশ মাসের মধ্যেই এসব সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় তারা ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৪০টিতে একমত হয়েছেন বলে জানান আহমেদ আব্দুল কাদের।
তবে ১০টি প্রস্তাবে কোনো ঐকমত্য হয়নি এবং ১৬টি প্রস্তাবে আংশিক মতৈক্য হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “সংবিধানে মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস রাখার বিধান থাকতে হবে। এছাড়া সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে যে, ইসলামের বিরোধী কোনো আইন প্রণয়ন করা যাবে না। এটি সামাজিক ও ধর্মীয় স্থিতিশীলতার জন্য জরুরি।”
সংবিধান সংস্কার কমিশনের বহুত্ববাদ সংক্রান্ত প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি, গণতন্ত্রই যথেষ্ট। যদি মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত থাকে, তবে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি হবে না। তাই বহুত্ববাদের কোনো প্রয়োজন নেই।”
আলোচনার কিছু বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান খেলাফতে মজলিশের মহাসচিব। “কিছু বিষয়ে আমরা ওনারা বিবেচনা করবো বলে জানিয়েছি। কৌশলগত কিছু বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হলে আমাদের আপত্তি থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ অতীতে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন করবে না। ১৯৭০ সালে তারা বলেছে, সাম্প্রতিক নির্বাচনেও বলেছে, কিন্তু বাস্তবে তারা তা মেনে চলেনি।”
মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নেয়।
এই সংলাপে তারা রাজনৈতিক সংস্কার, সংবিধানের ধর্মীয় বিধান, বিচারপ্রক্রিয়া এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন।