বাহাত্তরের সংবিধান অবৈধ, কারণ এটি পাকিস্তানের নির্বাচিত গণপরিষদের সদস্যরা প্রণয়ন করেছিলেন—এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
শনিবার বিকেলে শরীয়তপুর পৌরসভা মাঠে দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছিল, তা বৈধ হতে পারে না। কারণ, যারা এটি তৈরি করেছিলেন, তারা পাকিস্তান গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। পাকিস্তানের সংবিধানের আওতায় নির্বাচিত সদস্যদের তৈরি করা সংবিধান দিয়ে বাংলাদেশ চলতে পারে না।
তিনি বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে, যা দেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার প্রতিফলন ঘটাবে এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা নয়, তবে নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার প্রয়োজন। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে এবং কিছু মৌলিক সংস্কার করে নির্বাচন করতে হবে।
জামায়াত নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশ কখনোই পরিপূর্ণ স্বাধীনতা পায়নি। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা পরিপূর্ণ হয়নি, ১৯৭১ সালেও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়নি। ২০২৪ সালেও নতুন স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ভুল নেতৃত্বের কারণে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল এবং তার পরিণতি সবাই দেখেছে। শেখ মুজিব, জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আন্দোলনের মুখে এরশাদের পতন হয়েছে, আর গত ১৫ বছর জামায়াতের নেতাকর্মীরা জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ৫৪ বছর ধরে নির্যাতিত ও প্রতারিত হয়েছেন। এবার যদি জামায়াতে ইসলামীর সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তারা নৈতিকতা ও কল্যাণের ভিত্তিতে আদর্শ রাষ্ট্র তৈরি করবে, যেখানে নারী-পুরুষ, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলিম—সবার অধিকার নিশ্চিত হবে।