বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক উত্তেজনা: মাস্কট বৈঠকে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বার্তা
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে আগামী সপ্তাহে মাস্কটে বসতে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক। ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে এ আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলোর মতে, বৈঠকে বাংলাদেশ নয়াদিল্লিকে স্পষ্ট বার্তা দেবে—সম্পর্ক যেন আরও অবনতির দিকে না যায় এবং অস্থিরতা না বাড়ে। বিশেষ করে, ভারতের অভ্যন্তরে বসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপের বিষয়ে ঢাকা উদ্বিগ্ন।
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে দৃশ্যমান পরিবর্তন এসেছে। শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করলেও, তার বিভিন্ন বক্তব্য ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি তার এক ভার্চ্যুয়াল ভাষণের জেরে ঢাকায় বিক্ষোভ ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে।
এর আগে, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশি কনস্যুলেটে হামলা এবং সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধির ঘটনায় ঢাকা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশ কড়া বার্তা দিয়েছে, এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি পাল্টা তলব করেছে নয়াদিল্লি।
কূটনীতিকদের মতে, মাস্কট বৈঠকে ঢাকা ভারতের প্রতি অনুরোধ জানাবে—সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি না করা, শেখ হাসিনার বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা বন্ধ করা এবং দুই দেশের সম্পর্কে কৃত্রিম টানাপোড়েন না বাড়ানো। এ ছাড়া সীমান্ত হত্যা বন্ধ, কূটনৈতিক মিশনে হামলা রোধ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিবাচক ধারা বজায় রাখার বিষয়ে আহ্বান জানানো হবে।
দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েনের এই বিরল অধ্যায়ে মাস্কটের বৈঠক কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।