বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা বহুল আলোচিত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (২ জুলাই) ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত করছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান। তবে তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণে এটি এরই মধ্যে ৮৬ বার পেছানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার চুরি হয়। সাইবার হামলার মাধ্যমে চুরি হওয়া ওই অর্থের মধ্যে অন্তত ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)-এর বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা হয়। পরে এসব অর্থ ফিলিপাইনের ক্যাসিনো খাতে চলে যায়।
এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক (হিসাব ও বাজেট) জোবায়ের বিন হুদা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে সিআইডি মামলাটির তদন্ত করে আসছে।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রায় ১৫ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইন থেকে এবং ২০ মিলিয়ন ডলার শ্রীলঙ্কা থেকে উদ্ধার করতে পেরেছে। তবে বাকি অর্থ ফেরত আনতে এখনো কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
রিজার্ভ চুরির ঘটনার পর ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক ৬৬ মিলিয়ন ডলার ফেরত পেতে যুক্তরাষ্ট্রে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে। ২০২৩ সালের ২ মার্চ নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি চলমান রাখার অনুমতি দেয়, যদিও আরসিবিসির বিরুদ্ধে আনা কয়েকটি অভিযোগ আদালত খারিজ করে দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাইবার অপরাধের এই মামলার নিষ্পত্তি এখনো ঝুলে আছে। আদালতের নতুন এই নির্দেশনার ফলে তদন্ত দ্রুত শেষ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের আশাবাদ তৈরি হয়েছে।