বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং ভারতে আশ্রয় গ্রহণের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি প্রভাবিত করতে পারে।
ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী মন্তব্য করেছেন যে, বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন আসতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী এবং উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবে নোট বিনিময় করে থাকে।"
তবে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে এই সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
নতুন অন্তর্বর্তী সরকার, নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে, ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির দিকে মনোনিবেশ করছে। ইউনূসের সরকার ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের চেষ্টা করছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে পারে।
শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতার গ্রেপ্তার এবং ভারতের বাংলাদেশি ভিসা স্থগিতকরণ এই উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে, উভয় দেশের পররাষ্ট্র সচিবরা ঢাকায় বৈঠক করেছেন উত্তেজনা নিরসনের জন্য। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভারতের কাছে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনার সরকারকে সমর্থন দেওয়ার কারণে ভারত এখন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। হাসিনার সরকারের পতনের পর, ভারতকে তার কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হচ্ছে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে ভারতকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন বাস্তবতা সৃষ্টি হয়েছে। উভয় দেশকে সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে, যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুদৃঢ় থাকে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।