বাংলাদেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু
দেশে প্রথমবারের মতো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) আক্রান্ত এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ৩০ বছর বয়সী সানজিদা আক্তার নামের ওই নারী মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আরিফুল বাশার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. বাশার জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় সানজিদা আক্তার মারা যান। তবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে সরাসরি এইচএমপিভিকে দায়ী করা যাবে না। তিনি আরও জানান, সানজিদা ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া ও কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এ ছাড়া, তার অতিরিক্ত ওজনের কারণে ভেন্টিলেটর ব্যবহার করাও সম্ভব হয়নি। যদিও তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠছিলেন, কিন্তু হঠাৎ জটিলতার কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়।
এইচএমপিভি আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পর সানজিদা আক্তারের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে ঢাকায় আনা হয়। তবে তার বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস ছিল না। ১২ জানুয়ারি, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছিল, সানজিদা একই সঙ্গে ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়ায়ও আক্রান্ত ছিলেন।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেছেন, এইচএমপিভি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। প্রতিবছরই দেশে দু-চারজন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাওয়া যায় এবং বাংলাদেশেও এর উপস্থিতি বহু আগে থেকেই শনাক্ত হয়েছে।
তবে এইচএমপিভি সংক্রমণ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, কারণ এই ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন নেই। সংক্রমিত রোগীদের উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসাই একমাত্র পন্থা। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ও সর্দি অন্যতম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে সচেতন থাকা জরুরি।
সানজিদার মৃত্যু পরবর্তী সময়ে তার স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গেছেন। হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে এবং প্রয়োজন হলে মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনার পরিকল্পনা করবে।