মাত্র পাঁচ মাস আগেও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এতটা সংকটপূর্ণ ছিল না। বর্তমানে সম্পর্কের অবনতির কেন্দ্রে রয়েছে বিতাড়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়ার বিষয় এবং তাঁকে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার সুযোগ দেওয়া।
২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্র ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন যে, নয়াদিল্লি থেকে আসা বক্তব্য উত্তেজনা সৃষ্টি করছে।
ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী শক্তি এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে মরিয়া। বিজেপি এবং আরএসএসের নেতারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিয়ে মন্তব্য করে উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের তুলনা করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দিচ্ছেন। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন, যা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে।
ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি অন্য দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বললে তা হাস্যকর মনে হয়। বাংলাদেশেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো সামাজিক মাধ্যমে অতিরঞ্জিত হয়ে প্রকাশিত হয়। ভারত যদি প্রকৃত অর্থে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নেতৃত্ব নিতে চায়, তবে তাকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
সার্কের মতো আঞ্চলিক সংস্থা এখন কার্যত অকার্যকর। ৯ ডিসেম্বরের ভারত-বাংলাদেশ বৈঠকে বাংলাদেশ সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের উচিত এই উদ্যোগকে গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা।
পার্থ এস ঘোষ
জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক
(দ্য ওয়্যার থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনুবাদ)