মেঘালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাঙমা সম্প্রতি বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার জন্য একটি করিডোর স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এই করিডোরের মাধ্যমে মেঘালয় ও ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে ভৌগোলিক দূরত্ব হ্রাস পাবে এবং সংযোগ বৃদ্ধি পাবে।
মুখ্যমন্ত্রী সাঙমা জানান, প্রস্তাবিত করিডোরটি মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ থেকে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এই করিডোরের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বা তার বেশি। মহেন্দ্রগঞ্জ ও হিলি উভয় শহরই বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে, যা করিডোর বাস্তবায়নে সহায়ক হতে পারে।
এই করিডোর স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য হলো মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করা, যা বর্তমানে আসামের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। করিডোরটি নির্মিত হলে মহেন্দ্রগঞ্জের পাশাপাশি মেঘালয়ের তুরা, বাঘমারা, ডালু এবং ডাউকি জেলার সঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের সংযোগ স্থাপন সহজ হবে। এর ফলে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী চলাচল দ্রুত ও সাশ্রয়ী হবে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করবে।
করিডোরটি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সম্মতি ও সহযোগিতা অপরিহার্য। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডোর স্থাপনের ফলে দেশটি আঞ্চলিক বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে।
করিডোর বাস্তবায়নে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন সীমান্ত নিরাপত্তা, শুল্ক নিয়ন্ত্রণ, পরিবহন অবকাঠামো উন্নয়ন এবং স্থানীয় জনগণের স্বার্থ রক্ষা। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা ও সমন্বয় প্রয়োজন। উভয় দেশের সরকারকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে যাতে করিডোরটি উভয় দেশের জন্য লাভজনক হয় এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত হয়।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাঙমার প্রস্তাবিত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডোর স্থাপন উদ্যোগটি আঞ্চলিক সংযোগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা, সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে এই করিডোর বাস্তবায়ন করা গেলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি পাবে।