সৌদি আরব জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর আজ বুধবার সৌদি আরব এ অবস্থান নিশ্চিত করেছে। ট্রাম্পের ভাষ্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেখানে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করবে। তিনি এই মন্তব্যটি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনিদের ভূমি থেকে উচ্ছেদের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং তাদের অবস্থান অপরিবর্তনীয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট এবং দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছেন, যা অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
ফিলিস্তিনিরা গাজায় চলমান সংঘাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, তারা নতুন করে আরেকটি 'নাকবা' বা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারেন। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের জন্মভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, যা ইতিহাসে 'নাকবা' নামে পরিচিত।
মধ্যপ্রাচ্যে সৌদির কূটনৈতিক নীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং ট্রাম্প ও ইসরায়েলের জন্য এটি একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিল যাতে দেশটি ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধের পর সৌদি আরব এ ধরনের আলোচনা স্থগিত করে দেয়, কারণ ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে আরব বিশ্বে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
ট্রাম্প ইচ্ছা করেছিলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের মতো সৌদি আরবও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করুক। ২০২০ সালে 'আব্রাহাম চুক্তি' স্বাক্ষর করার পর এসব দেশ প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিল, যা কয়েক দশকের 'ট্যাবু' ভেঙে দেয়।
সৌদি আরবের মতো প্রভাবশালী একটি দেশ যদি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে তা কূটনৈতিক দিক থেকে একটি বড় জয় হিসেবে দেখা হবে, কারণ সৌদি আরব শুধু মধ্যপ্রাচ্যে নয়, পুরো মুসলিম বিশ্বের ওপর ব্যাপক প্রভাব রাখে এবং এটি বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ।