‘ফিনিশ দ্য জব’: ট্রাম্পের সমর্থনে এবার ইরানকে হুমকি দিলেন নেতানিয়াহু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “গত ১৬ মাসে ইরানের সন্ত্রাসী অক্ষকে শক্তিশালী আঘাত হেনেছে ইসরায়েল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে কোনো সন্দেহ নেই যে আমরা কাজটি শেষ করব।” নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য সরাসরি ইরানকে হুমকি দেওয়ার শামিল বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কো রুবিওও ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “একটি পারমাণবিক ইরান কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। হামাস, হিজবুল্লাহ, পশ্চিম তীরে সহিংসতা, সিরিয়া বা ইরাকে অস্থিরতা— সবকিছুর পেছনে ইরান রয়েছে। এটি অবশ্যই সমাধান করতে হবে।” রুবিও আরও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি জটিল, কিন্তু আমাদের অগ্রাধিকার স্পষ্ট— ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব কমাতে হবে।”
এদিকে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সম্প্রতি সতর্ক করেছে যে, ইসরায়েল এই বছর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে নেতানিয়াহু এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
নেতানিয়াহু আরও জানিয়েছেন, গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে তার ও ট্রাম্পের কৌশল অভিন্ন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি সব জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে আমরা নরকের দরজা খুলে দেব।” তার এই বক্তব্য গাজার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ মাসে ট্রাম্প গাজাকে “অধিগ্রহণ” করে ধ্বংস হওয়া অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক মহলে এ প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও মার্কো রুবিও এ পরিকল্পনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, “আমরা একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি হতে দিতে পারি না। নতুন কৌশল প্রয়োজন।”
নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি আগে থেকেই জানতেন এবং এটি গাজার জনগণ, ইসরায়েল ও গোটা অঞ্চলের জন্য একমাত্র কার্যকর সমাধান হতে পারে বলে মত দেন। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহুর এই অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিশেষ করে, ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণাত্মক অবস্থান নেওয়া যুদ্ধ পরিস্থিতির দিকেই নিয়ে যেতে পারে ইসরায়েলকে। ফলে বিশ্ব রাজনীতির ভারসাম্যে নতুন অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।