ফাঁস হওয়া ফোনালাপের জেরে বরখাস্ত থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে বরখাস্ত করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। সাবেক কম্বোডীয় প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর ওই অডিও ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও জনরোষের জেরে মঙ্গলবার (১ জুলাই) আদালত এই রায় দেয়। খবর বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত ৭-২ ভোটে প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্নকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাঁকে ১৫ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে উপ-প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুনগ্রুনগ্রুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ফাঁস হওয়া অডিওতে প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্নকে সাবেক কম্বোডিয়ান নেতা হুন সেনকে “আঙ্কেল” বলে সম্বোধন করতে এবং থাই সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায়। এ ঘটনায় জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তার বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন জমা পড়ে।
এর জেরে আদালতে একটি মামলার শুনানির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিচারাধীন অবস্থায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানায় আদালত।
এতে করে থাই রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবারের তৃতীয় সদস্য হিসেবে মেয়াদ পূরণের আগেই ক্ষমতা হারালেন পায়েতংতার্ন। এর আগে তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা এবং চাচী ইংলাক সিনাওয়াত্রাও সামরিক হস্তক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, পায়েতংতার্ন থাইল্যান্ডের ফিউ-থাই পার্টির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের প্রধান ছিলেন। জোটটি পার্লামেন্টে অল্প ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। তবে মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তাদের একটি রক্ষণশীল শরিক দল জোট ছেড়ে দেয়, ফলে সরকারের স্থিতিশীলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে।
বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিকভাবে উত্তাল থাইল্যান্ডে এই বরখাস্ত ভবিষ্যতে আরও অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে। এখন দেখা যাক, সাময়িক বরখাস্তের পর আদালতের চূড়ান্ত রায়ে কী আসে এবং ফিউ-থাই পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়ায়।