ফরিদপুরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই নেতার বাড়িসহ অন্তত ৩১টি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৯ জন, যাদের মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্কাস মাতুব্বর, আর অপরপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি হাশেম খান।
সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় গতকাল রোববার, যখন এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাফর ইকবাল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে সংঘর্ষে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি নেন। তবে পুলিশ জানায়, আক্কাস মাতুব্বর প্রতিশ্রুতি মানলেও হাশেম খান গোপনে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেন।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে হাশেম খানের সমর্থকরা আক্কাস মাতুব্বরের বাড়ি ও তার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এর কিছুক্ষণ পর আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরাও পাল্টা হামলা চালায়।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন জানান, দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব চলছিল। আক্কাস মাতুব্বর অভিযোগ করেন, "আমরা সংঘর্ষে লিপ্ত হব না বলে পুলিশের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, কিন্তু হাশেম খান তা মানেননি। তার লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে।"
অন্যদিকে, হাশেম খান পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, "আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরাই আমার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।"
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, "সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"