পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গঠিত স্বাধীন কমিশন পলাতক ব্যক্তিদের প্রয়োজনে দেশের বাইরে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশনের সভাপতি, বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমান বৃহস্পতিবার পিলখানায় এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমরা প্রথমে পলাতকদের অবস্থান চিহ্নিত করব এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করব। যদি পলাতকদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, তাহলে তাদের দেশেই গিয়ে স্টেটমেন্ট নেওয়া হবে।"
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন, যা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এই ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবিতে সরকারের প্রতি জনমত শক্তিশালী হওয়ায়, গত মঙ্গলবার জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয় এবং ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
কমিশনের সভাপতি ফজলুর রহমান জানান, "আমরা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত চালিয়ে যাব এবং কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হব না।" তিনি আরও বলেন, "এই ঘটনা পৃথিবীতে বিরল, যেখানে এতসংখ্যক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা একসঙ্গে নিহত হয়েছেন। আমরা যারা নিপীড়িত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন, তাদের সকল ক্ষতিই নজরে রাখব এবং খুব সহমর্মিতার সঙ্গে তদন্ত চালিয়ে যাব।"
কমিশনের সদস্যরা বলছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি শুধু দেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কমিশনের সদস্যদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বিশেষ নিরাপত্তা ও কাজের সুবিধা চেয়ে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ফজলুর রহমান জানিয়েছেন, "কমিশনের সদস্যদের মর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের বিচারকের সমান হবে।"
তিনি বলেন, "আমরা অন্ধকারে কাজ করতে চাই না, আমাদের তদন্ত জাতির সামনে তুলে ধরব, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।" কমিশনের সদস্যদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম আকবর আলী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরীফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহনেওয়াজ খান চন্দন বিদেশে থাকায় সভায় উপস্থিত ছিলেন না।