পাকিস্তানে স্বর্ণের খনির সন্ধান : পাল্টে যেতে পারে অর্থনীতি
আর্থিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানে এক বিশাল স্বর্ণের খনির সন্ধান দেশের অর্থনীতির গতিপথ বদলে দিতে পারে। সিন্ধু নদের পাঞ্জাব অংশের অববাহিকায় এই খনিতে প্রায় ২৮ লাখ ভরি (প্রায় ৩৩ টন) স্বর্ণের মজুত রয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৮ হাজার কোটি পাকিস্তানি রুপি।
পাঞ্জাব প্রদেশের সাবেক খনিমন্ত্রী ইব্রাহিম হাসান মুরাদ এক্সে (পূর্বের টুইটার) তার এক পোস্টে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের ভূতাত্ত্বিক গবেষণা সংস্থা (জিএসপি) এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার করেছে। ১২৭টি স্থানের নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে জিএসপি নিশ্চিত করেছে, সিন্ধু নদের পাঞ্জাব অঞ্চলের তলদেশে এই বিপুল পরিমাণ সোনা জমা হয়েছে।
মুরাদ বলেন, “৩২ কিলোমিটার বিস্তৃত এই খনিতে স্বর্ণ উত্তোলন শুরু হলে পাকিস্তানের অর্থনীতি একটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে। শুধু কর্মসংস্থানই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি বহু সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সিন্ধু নদের স্রোতে হিমালয় থেকে ভেসে আসা সোনার কণা হাজার হাজার বছর ধরে নদীর তলদেশে জমা হয়ে এ মজুত তৈরি করেছে। এই প্রক্রিয়াটি ভূতাত্ত্বিক পরিভাষায় পরিচিত ‘প্লেসার ডিপোজিশন’ নামে।
ইব্রাহিম মুরাদ আরও জানান, কেবল পাঞ্জাবের অ্যাটক জেলায় প্রায় ৩২.৬ মেট্রিক টন সোনা থাকতে পারে। তবে ২০২৪ সালে পাঞ্জাব সরকার সিন্ধু নদ থেকে সোনা উত্তোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অবৈধ খনন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
বিশ্বের স্বর্ণের মজুত নিয়ে সাম্প্রতিক অন্যান্য খবরও আলোচনায় এসেছে। ২০২৪ সালের ২৯ নভেম্বর চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চীনে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বর্ণের খনির সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে আনুমানিক হাজার টন স্বর্ণের মজুত রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৮,৩০০ কোটি ডলার।
পাকিস্তানের এই নতুন আবিষ্কার যদিও স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনা করাই হবে সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে পাকিস্তান এ আবিষ্কারকে তাদের অর্থনীতির পুনর্গঠনে কাজে লাগাতে পারে।