পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান দেশটির সেনাবাহিনী প্রধান সাইদ আসিম মুনিরকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেছেন, সামরিক বাহিনী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে, যা দেশের জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গওহর আলী খান সোমবার আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইমরান খান চিঠিতে দূরত্ব সৃষ্টির কারণ বিশ্লেষণ করেছেন এবং তা কমানোর জন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর আত্মত্যাগের প্রশংসাও করেছেন।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনের বরাতে জানা যায়, চিঠিতে ইমরান খান উল্লেখ করেছেন যে, তিনি কেবল সাবেক প্রধানমন্ত্রীই নন, বরং দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। এ কারণে জনগণ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজনের বিষয়টি তিনি সামনে এনেছেন।
ইমরান খানের আইনজীবী ফয়সাল চৌধুরী জানান, চিঠিতে মোট ছয়টি মূল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। ইমরান খানের মতে, সেনাবাহিনী দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, তবে কিছু নীতির কারণে জনগণের সঙ্গে তাদের দূরত্ব বাড়ছে, যা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিচারব্যবস্থা ২৬তম সংশোধনীর কারণে ভেঙে পড়েছে এবং এতে আইনজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি তিনি ‘প্রতিরোধমূলক অপরাধ আইন’ সংশোধনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার দাবি, এই আইনের কারণে পাকিস্তানের ইন্টারনেটভিত্তিক শিল্পখাত ইতোমধ্যেই ১.৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি পাকিস্তানের জিএসপি প্লাস সুবিধাও ঝুঁকিতে রয়েছে।
চিঠিতে তিনি আল-কাদির ট্রাস্ট মামলাসহ সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকেও ২৪৯ পৃষ্ঠার একটি বিশদ চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যেখানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু নিয়ে তার অবস্থান তুলে ধরা হয়েছিল।