বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের মেয়ে বৃষ্টি খাতুন মালয়েশিয়ার কৃষি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন। তার উদ্ভাবনী চিন্তা, কঠোর পরিশ্রম ও টেকসই কৃষির প্রতি অঙ্গীকার মালয়েশিয়ায় কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে।
২০১৭ সালে কোতা দামানসারার সেগি ইউনিভার্সিটিতে হোটেল ম্যানেজমেন্টে পড়াশোনা শুরু করলেও রান্না ও টেকসই খাদ্যের প্রতি গভীর আগ্রহ তাকে কৃষি গবেষণার দিকে নিয়ে যায়। কোভিড-১৯ মহামারির সময় খাদ্য সংকট মোকাবিলায় তিনি ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার’ প্রকল্প চালু করেন, যার মাধ্যমে ৫৯টি দেশের ৭,৫০০ শিক্ষার্থী এবং সাতটি দেশের শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন।
পরবর্তীতে সানওয়ে ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নকালে খাদ্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক শীর্ষ পরিবেশ বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃত অধ্যাপক আগামুথু পারিতাম্বির তত্ত্বাবধানে তিনি পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন, যার লক্ষ্য খাদ্য বর্জ্য ব্যবহার করে টেকসই কৃষি মডেল তৈরি করা।
বর্তমানে মালয়েশিয়ার শাহ আলমে কেবুনিতি বেরহাদ এগ্রোপার্কে তার গবেষণা প্রকল্প চালু রয়েছে, যেখানে খাদ্য বর্জ্যকে বোকোশি কম্পোস্টিং পদ্ধতিতে সার তৈরি করে মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পরীক্ষা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে ইপোহ রাজ্যের জাপানি তরমুজ খামারে তার উদ্ভাবিত পদ্ধতি প্রয়োগ করে দ্বিগুণ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে এবং কৃষি বর্জ্য প্রায় ৯০% হ্রাস পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি স্মার্ট ফার্মিং ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে মূল বক্তা হিসেবে অংশ নিয়েছেন এবং মালয়েশিয়ার তেরোনো বাটুগাজার কাঁচা বাজারে টেকসই কৃষি প্রকল্প পরিচালনা করছেন। এছাড়া, ‘এক কাপ কফি কিনুন, স্থানীয় কৃষিতে অবদান রাখুন’ প্রচারাভিযান চালিয়ে স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছেন।
তার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য এশিয়ান কৃষিতে টেকসই উন্নয়নের একটি শক্তিশালী মডেল তৈরি করা, যা খাদ্য নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।