বিদ্যুৎ খরচ কমাতে নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ (হাইড্রোলিক পাওয়ার) আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ‘ডিজেএফবি টক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান, আর সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মুহিব।
প্রেস সচিব জানান, “বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে জলবিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যদি নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনা সম্ভব হয়, তাহলে বিদ্যুৎ খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে এবং জ্বালানি খাতে স্থিতিশীলতা আসবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিদ্যুৎ খাতে অতীতে লুটপাটের অবসান ঘটাতে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করা হয়েছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করছে।”
আগের সরকারের অপচয় ও কর বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্তব্য
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ ও দুর্নীতির কারণে জনগণকে করের বোঝা বহন করতে হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই টানেল আগামী ১০ বছরেও জরুরি ছিল না, কিন্তু একজন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বার্থে এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন এই অপচয়ের দায় সবাইকে টানতে হচ্ছে, যার কারণে কর বৃদ্ধি করতে হচ্ছে।”
দুর্নীতি দমন ও কর্মসংস্থান সংকট
প্রেস সচিব বলেন, “বিগত সরকার যে অব্যবস্থাপনা রেখে গেছে, তাতে ইচ্ছা করলেও দুর্নীতি বন্ধ করা কঠিন। তবে এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার বিভিন্ন খাত ডিজিটালাইজ করার উদ্যোগ নিয়েছে, বিশেষ করে ভূমি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) খাতে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকট কর্মসংস্থানের অভাব। তরুণদের জন্য পর্যাপ্ত চাকরি নেই। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সরকার কাজ করছে। এর আগের সরকারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ঠিকমতো মুনাফা নিয়ে যেতে পারতেন না, যা তাদের নিরুৎসাহিত করেছিল। এখন সরকার সেই প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা করছে।”
শফিকুল আলম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “দেশে স্থিতিশীলতা বজায় থাকলে আগামী দিনে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, যা কর্মসংস্থান সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে।”