ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেছেন দেশটির ৬২ শতাংশ নাগরিক। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই দাবি উঠেছে। ইসরায়েলের দৈনিক মারিভ পরিচালিত এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপে দেখা গেছে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন লিকুদ পার্টির সমর্থকদের ১৮ শতাংশও তার পদত্যাগ চান। অন্যদিকে বিরোধী দলের ৯৩ শতাংশ এবং ক্ষমতাসীন জোটভুক্ত দলগুলোর ৩১ শতাংশ সমর্থক এ দাবি জানিয়েছেন। তবে ২৯ শতাংশ ইসরায়েলি এখনো তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান, এবং ১৯ শতাংশ কোনো মতামত দেননি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আক্রমণে ইসরায়েল চরম নিরাপত্তা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়। এই হামলায় নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। হামাসের এই হামলা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত।
পরবর্তীতে ইসরায়েল গাজায় ১৫ মাস ধরে সামরিক অভিযান চালায়, যা ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর অভিযান হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। এই অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। শেষমেশ ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
নিরাপত্তা ব্যর্থতার জন্য নেতানিয়াহুকে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। তবে তিনি এ ঘটনার দায় স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে পুরো দোষ সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছেন।
জরিপ অনুযায়ী, ইসরায়েলিদের মধ্যে মাত্র ২৮ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে। ৩৯ শতাংশ মনে করেন যুদ্ধবিরতি অস্থায়ী এবং ৩৩ শতাংশ এ বিষয়ে সন্দিহান।
জরিপের আরেকটি উল্লেখযোগ্য তথ্য হলো, যদি এখনই নির্বাচন হয়, তবে বিরোধী দলীয় জোট ১২০ আসনের মধ্যে ৫৯টি আসনে জয়ী হতে পারে। অন্যদিকে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সর্বোচ্চ ৫০টি আসনে এবং আরব পার্টিগুলো ১০টি আসনে জয়ী হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তা এবং নেতৃত্বের প্রতি আস্থা হ্রাস পাওয়ার এই চিত্র ইসরায়েলের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।