নিপাহ ভাইরাসের বিস্তার ও ঝুঁকি: ২০২৪ সালের পরিস্থিতি
চলতি বছরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচজনের সবাই মারা গেছে, যার ফলে ২০২৪ সালের জন্য মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১০০ শতাংশ। গত বছর মৃত্যুর হার ছিল ৭৭ শতাংশ। রাজধানী ঢাকার মহাখালীতে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) গতকাল এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে ১৩ জন আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়। সে বছর নতুন করে দেখা যায়, মায়ের দুধের মাধ্যমে শিশুর শরীরে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন তথ্য। আইইডিসিআরের মতে, এই ভাইরাসে সাধারণত ৭১ শতাংশ আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যায়।
নিপাহ ভাইরাস বাংলাদেশের মূলত ফলভুখ বাদুড়ের মাধ্যমে ছড়ায়, এবং এর সংক্রমণ শীতকালে বৃদ্ধি পায়। খেজুরের কাঁচা রস থেকে মানুষের মধ্যে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে, তাই রস খাওয়ার আগে তাকে জ্বাল দিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে চিকিৎসক এবং নার্সদের সঠিক সুরক্ষা ব্যবস্থা (যেমন মাস্ক ও গ্লাভস) গ্রহণের প্রয়োজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণে ৪০-৭৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে। ভাইরাসটি গৃহপালিত প্রাণী এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছড়াতে পারে।
এছাড়া, আইসিডিডিআরবি এবং আইইডিসিআর দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত করার ব্যবস্থা করছে। ২০০১ সালে প্রথম বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয় এবং এখন পর্যন্ত দেশের ৩৪টি জেলায় এর সংক্রমণ ছড়িয়েছে। গত ২৩ বছরে ৩৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে ৭১ শতাংশ মারা গেছেন।
এ ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আইইডিসিআর ২০০৬ সাল থেকে ৮টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।