নারীশিক্ষার বিশ্বব্যাপী আইকন ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানে ফিরে এসেছেন। ইসলামিক বিশ্বে মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে ‘গার্লস এডুকেশন ইন মুসলিম কমিউনিটিস’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে তিনি শনিবার ইসলামাবাদে পৌঁছান। মা-বাবার সঙ্গে কনফারেন্সে যোগ দিয়ে মালালা বলেন, “পাকিস্তানে ফিরতে পেরে আমি সত্যি সম্মানিত, অভিভূত ও আনন্দিত।”
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ইসলামিক বিশ্বে নারীদের শিক্ষা প্রসারে পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে মুসলিম প্রধান দেশগুলোর প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও এই সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন।
সম্মেলনে রোববার মালালার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আফগানিস্তানে নারীশিক্ষার ওপর তিনি বিশেষ জোর দিতে চান। আফগানিস্তানই বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়েদের বিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ নিয়ে মালালা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, “আমি মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অধিকারের সুরক্ষা নিয়ে কথা বলব এবং তালেবান নেতাদের তাদের অপরাধের জন্য কীভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা যায়, সে বিষয়েও আলোকপাত করব।”
পাকিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকি জানিয়েছেন, এই সম্মেলনে আফগানিস্তানের তালেবান প্রশাসনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা কোনো সাড়া দেয়নি।
মালালার জীবনযাত্রা সংগ্রামের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। ২০১২ সালে, স্কুলে পড়ার সময় পাকিস্তানের তালেবান জঙ্গিরা তার ওপর ভয়াবহ হামলা চালায়। স্কুলবাসে তাকে গুলি করা হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয় এবং মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন। তারপর থেকে তিনি নারীদের শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন।
২০১২ সালের হামলার পর প্রাণনাশের ঝুঁকির কারণে মালালা খুব কমবারই পাকিস্তানে ফিরেছেন। তবে এই সফরে তিনি তার নিজ দেশে ফিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নারীশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।