নাতাঞ্জে আগুনে পুড়ল ইরানের প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্র, ইসরায়েলি হামলার সন্দেহ
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের রাজধানী তেহরান এবং এর আশপাশে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইরানের স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৩ জুন) ভোর ৪টার দিকে তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এই হামলার আগেই ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতাঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্র ইরানের পরমাণু কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। এটি রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। সেখানেই রয়েছে উন্নতমানের সেন্ট্রিফিউজ নির্মাণ ও সংযোজনের স্থাপনা, যার মাধ্যমে ইউরেনিয়াম পারমাণবিক জ্বালানিতে রূপান্তরিত হয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এবং ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের তথ্যানুসারে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবি বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, নাতাঞ্জ কেন্দ্র থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা গেছে। প্রেস টিভির প্রকাশিত এক ভিডিওতেও এই ধোঁয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে। নাসার ফায়ার ইনফরমেশন ফর রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (FIRMS) অনুসারে, স্থানীয় সময় রাত ২টার কিছু পরে আগুনের সূত্রপাত ঘটে।
ইরানি সরকার এখনো পর্যন্ত এই অগ্নিকাণ্ড বা হামলা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেয়নি। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, পারমাণবিক সক্ষমতা দুর্বল করতে ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালিয়েছে। তারা বলছেন, এটি ২০২০ সালের জুলাই মাসে একই কেন্দ্রে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা সরে যাওয়ার পর ইরান ধাপে ধাপে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বাড়াতে শুরু করে। এরপর থেকেই ইরানের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে এমন অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক ঘটনা বেড়ে যায়। এই প্রেক্ষাপটেই নাতাঞ্জে সংঘটিত সর্বশেষ অগ্নিকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক মহল গভীর উদ্বেগ ও সন্দেহের চোখে দেখছে।